সারদাকর্তার মুক্তির পথ প্রশস্ত হচ্ছে!
তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস সুদীপ্ত ও দেবযানী
মৃণাল কান্তি দাস, ১৯ অগাস্ট : এবার কি তবে সারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত ও জেলে থাকা কর্তাব্যক্তিদের বাইরে আসার পথ প্রশস্ত হচ্ছে...? হঠাৎ এমন প্রশ্ন উঠল। এজন্য হঠাৎ সংগঠিত একটি ঘটনা দায়ী। হঠাৎই এদিন সারদাকাণ্ডের তিনটি মামলার রায় সামনে আসে। আর তাতে সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন। একযুগ ধরে সারদাকাণ্ডে মামলা চলছে। সেসব রায় বাইরে এসেছে বলে শোনা যায়নি।
জানা গেছে, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২৫০টি মামলা দায়ের করেছে। এর মধ্যে নাকি ২১৪টি মামলায় সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায় জামিন পেয়েছেন। আর আজ, মঙ্গলবার আরও তিনটি মামলায় তাঁরা দুজনে বেকসুর খালাস পেলেন। তাহলে ২১৭টি মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল। বাকি ৩৩টি মামলায় যদি এভাবে জামিন আর খালাস পেয়ে যান, তাহলে বাইরের খোলা আকাশের নীচে আসতে আর বেশিদিন লাগবে না। তা ছাড়া আজকাল তো দেখছি আর্থিক প্রতারণা মামলায় জেলমুক্তির লাইন পড়ে গেছে। খুব শীঘ্রই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী না "শিক্ষাচোর" বলে প্রতিবাদী জনতার গলাফাটানো সেই ব্যক্তি বাইরে আসতে চলেছেন। তাহলে সুদীপ্ত সেন বের হতে কি আর বেশিদিন লাগবে ...? না লাগাই বোধকরি স্বাভাবিক।
খবরে প্রকাশ, ২০১৩ সালে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এই দুই অভিযুক্তের নামে তিনটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। যেখানে মোট ১০-১৫ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠে। পরে রাজ্য সরকারও এই মামলাগুলির তদন্তে নামে। মঙ্গলবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালত ওই তিনটি মামলাতেই দু’জনকে বেকসুর খালাস করে দেয়। আদালতের রায়ে তাঁরা প্রতারণার অভিযোগ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পেলেন। আদালত সূত্রে খবর, সরকার পক্ষের তরফে ৫০ জন সাক্ষীকে তালিকাভুক্ত করা হলেও আদালতে হাজির করা সম্ভব হয় মাত্র ১৫ জনকে। এদিন তাঁদের বয়ানেও প্রতারণা বা জালিয়াতির কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলেনি। এমন হলে মুক্তিতে আর বিলম্ব হবে না।
আইনি মহলের মতে, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে এই প্রথম কোনো মামলায় আদালতের রায় সামনে এল, যা আগামীতে অন্য মামলাগুলির গতিপথেও প্রভাব ফেলতে পারে। সারদা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর, সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও অন্যতম শীর্ষকর্ত্রী দেবযানী মুখোপাধ্যায় কাশ্মীরের সোনমার্গে গা ঢাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই বছরই সেখান থেকেই তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উল্লেখ্য, সারদা চিটফান্ড কেলেংকারি খুব সম্ভবত দেশের বৃহত্তম ননব্যাংকিং আর্থিক প্রতারণা। সারাদেশ থেকে প্রধানত পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারত থেকে এই সংস্থা কত হাজার কোটি টাকা প্রতারণা করেছে তার সঠিক হিসেব তারা নিজেরাই হয়তো জানে না বা দিতে পারবে না।
No comments:
Post a Comment