Breaking

Tuesday, August 26, 2025

প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ, ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিক হেনস্তায় প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির ললিপপ না হওয়ার বার্তা

 প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ, ভিনরাজ্যে বাংলার শ্রমিক হেনস্তায় প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির ললিপপ না হওয়ার বার্তা 





      অনিকেত পান্থ, ২৬ আগস্ট : মোদির সফর এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দুর্নীতি নিয়ে কটাক্ষের জবাব দিতে পাল্টা আক্রমণে গেলেন মমতা। নাম না করে মোদিকে ‘দুকান কাটা’ বলে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “কমিশন যেন এখন বিজেপির ললিপপ!” তিনি বলেন," বিজেপির ললিপপ হবেন না।"

        মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনে কলকাতায় এসে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। সেই বক্তব্যের জবাবে পূর্ব বর্ধমানে সরকারি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পরেও নম্বর কাটা হচ্ছে। বাংলাকে চোর বলা হচ্ছে। অথচ চোরদের, গদ্দারদের সঙ্গেই মিটিং চলছে। লজ্জা করে না!”

        সহজাত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে মমতা এদিন বলেন, “লজ্জা, ঘৃণা আর ভয়—এই তিনটেকে জায়গা দেওয়া চলবে না। একটা কান কাটা থাকলে আরেকটা কাটা যাওয়ার ভয় থাকে। আর ওদের তো দুটো কানই কাটা! তাহলে ভয় কীসের?”

        ভিনরাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তার নিয়ে এদিনও মুখ খুললেন মমতা। তাঁর দাবি, বাংলার শ্রমিকরা এমনি বাইরে যাননি, তাঁদের কার্যত ‘জামাই আদর’ করে ভিনরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ তাঁরা নানা ক্ষেত্রে দক্ষ ও পরিশ্রমী। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “তবে কেন ওড়িশা, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, গুজরাটে বাঙালি শ্রমিকদের হেনস্তা করা হচ্ছে?” 

        উত্তর ও পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলি থেকে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্তার অভিযোগ বারবার সামনে এসেছে। কোথাও মারধর, কোথাও আবার থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে অপমান—প্রতিটি ঘটনাতেই একটি বিষয় মিলছে, শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্যই তাঁদের টার্গেট করা হয়েছে।

        আজ, মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভোট এলেই এনআরসি করতে হবে? নতুন করে নাম কাটা শুরু হবে? নির্বাচন কমিশনকে প্রণাম জানাই, সালাম জানাই—কিন্তু অনুরোধ, দয়া করে বিজেপির ললিপপ হয়ে উঠবেন না। তা হলে কিন্তু মানুষ আপনাদের ক্ষমা করবে না।”

        প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি মন্তব্য করেন, “ইলেকশন এলেই আপনি রোজ পরিযায়ী শ্রমিকের মতো চলে আসছেন। আমি চাই আপনি রোজ আসুন—কারণ সবই তো পাচ্ছেন ফ্রিতে! বিমান ফ্রি, হেলিকপ্টার ফ্রি, রাস্তা ফ্রি। আমি তো সরকারের কাছ থেকে এক পয়সাও নিই না।”  

         এই প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, “আমি সাতবারের এমপি। গত ১৪ বছরে চাইলে মাসে আড়াই-তিন লাখ টাকা পেনশন পেতে পারতাম। কিন্তু এক পয়সাও নিই না। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ সেক্রেটারি বসে আছেন, তাঁর সামনেই বলছি—সার্কিট হাউসে থাকলেও আমি নিজের বিল নিজেই মেটাই, সরকারের কাছ থেকে কিছু নিই না।”

মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও বলেন, “আমি গান লিখি, বই লিখি। সেখান থেকে আমার সংসার চলে। আমার অত খাই খাই নেই। দিনে একবার খাই।"

        বর্ধমান শহরের প্রশাসনিক সভা থেকে এদিন মমতা মোদিকে আক্রমণ করে বলেন, “বার বার আসে আর বলে, বাংলায় নাকি বাংলাদেশিরা থাকে। ১৯৪৭ সালের পরে যখন দেশভাগ হয়েছিল, তখন আপানারা কী করেছিলেন? বাংলা আর পাঞ্জাব ভাগ করেছিলেন। গিয়ে দেখুন, আন্দামান সেলুলার জেলে। ৭০ শতাংশ ছিলেন বাংলার আর পাঞ্জাবের। তাই ওরা বাংলা আর পাঞ্জাব তৈরি করেছিল। বাংলাদেশ তো আমরা করিনি, তোমরা করেছ। আমাদের ভাষা যদি এক হয়, আমরা কী করতে পারি?"

No comments:

Post a Comment