ডা. নিতাই হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি, ৪ জনের আমৃত্যু কারাবাস ও ১ জনের যাবজ্জীবন শাস্তি

 ডা. নিতাই হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসি, ৪ জনের আমৃত্যু কারাবাস ও ১ জনের যাবজ্জীবন শাস্তি

       এককথায় বললে অভূতপূর্ব রায়। একটি খুনের ঘটনায় একসঙ্গে ১০ জনকে চরম, চরমতম শাস্তির নিদান খুব কমই দেখা যায়। বাস্তবে ঘটল ঠিক তা-ই। ঢাকার দশম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম রবিবার এই রায় দেন।

      ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ২০১২ সালের ২৩ অগাস্ট রাতে হাসপাতালের আবাসিক এলাকায় নিজের বাড়িতে খুন হন ডা. নিতাই। আর ১৩ বছর আগে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালের এই সহকারী অধ্যাপক অর্থাৎ নারায়ণচন্দ্র দত্ত ওরফে নিতাইকে হত্যার ঘটনায় একসঙ্গে ১০ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এই মামলার দশ আসামির মধ্যে নিতাইয়ের গাড়িচালক কামরুল হাসান অরুণ, মাসুম মিন্টু, সাইদ ব্যাপারী, বকুল মিয়া এবং সাইদ মিজিকে ফাঁসির সাজার পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

         এই মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন – আবুল কালাম, সাইদুল, ফয়সাল এবং পেদা মাসুম। আর রফিকুল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাবাস। পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছে আদালত। এছাড়া রাতে ঘরে অনুপ্রবেশের দায়ে প্রত্যেককে ১৪ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

        মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে চুরির অপরাধে প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় ১০ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়।সংশ্লিষ্ট আদালতের সরকারি আইনজীবী মোয়াজ্জেম হোসেন এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আশা করছি উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে।”

      প্রসঙ্গ, ডা. নিতাই ছিলেন সেইসময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থক স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের একজন নেতা। এছাড়া তিনি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিষদের সদস্য। হত্যাকাণ্ডের রাতে ডা. নিতাইয়ের সঙ্গে ওই দোতলা বাড়িতে ছিলেন শুধু তাঁর বৃদ্ধা মা। স্ত্রী লাকী চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রামে।পরদিন নিতাইয়ের বাবা বনানী থানায় এজাহার দায়ের করেন। ছয় মাস তদন্ত শেষে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গাজি আতাউর রহমান ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন।

      ওই চার্জশিটে বলা হয়, চুরির সময় দেখে ফেলায় ওই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়। আসামিরা তার বাড়ি থেকে পাঁচ লাখ টাকা আর দুটি সোনার বালা নিয়ে যায়। পুলিশের তরফে বলা হয়, নিতাই হত্যার আসামিরা ‘পেশাদার চোর’। এই মামলায় গ্রেপ্তার আরেকজন অরুণ ছিলেন নিহত চিকিৎসক নিতাইয়ের গাড়িচালক।