Breaking

Sunday, August 17, 2025

অস্ত্র লুঠ করে স্বাধীন ব্রুল্যান্ড গড়ার ছক ফাঁস

 অস্ত্র লুঠ করে স্বাধীন ব্রুল্যান্ড গড়ার ছক ফাঁস 


        বিশেষ প্রতিবেদন, ১৭ আগস্ট : উত্তরপূর্ব ভারতের ছোট্ট পাহাড়, জঙ্গলের দেশ ত্রিপুরায় ফের জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়ছে। এখন এই রাজ্যের উত্তরভাগে স্বাধীন ব্রুল্যান্ড প্রতিষ্ঠার দাবি ঘিরে অশান্তির আবহ তৈরি হচ্ছে। জানা গেছে, এই অশান্তির কেন্দ্রস্থলে রয়েছে কাঞ্চনপুর। উত্তর ত্রিপুরার পাহাড়ি জনপদ কাঞ্চনপুরে ত্রিপুরা ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্টের জঙ্গিরা সক্রিয়। তাঁরা সেখানে পুলিশের উপর হামলা, থানা থেকে অস্ত্র লুঠ ইত্যাদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ছক কষেছিল। তবে পুলিশি তৎপরতায় সেসব ছক ভেস্তে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

       বিশেষ সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ত্রিপুরা ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্টের জঙ্গিরা ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কাঞ্চনপুর থানার গাড়ি উড়িয়ে দেওয়া এবং অস্ত্রলুঠের পরিকল্পনা করেছিল। প্রথমে সব গোপনেই এগুচ্ছিল। কিন্তু শেষমেশ পুলিশ এসবের খবর পেয়ে যায়। সময় মতো পুলিশের তৎপরতায় সেই নাশকতার ছক ভেস্তে যায়।

         ত্রিপুরার উত্তর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে থানার গাড়ি ধ্বংস করার পরিকল্পনা করছিল জঙ্গিরা। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল থানার অস্ত্র লুঠ করে নতুন করে সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করা। জেলা পুলিশ আগেভাগেই শুরু করে বিশেষ জঙ্গিবিরোধী অভিযান। পুলিশ সুপার অবিনাশ রাইয়ের নেতৃত্বে কাঞ্চনপুর, ভাংমুন ও দামছড়া থানার পুলিশ একযোগে অভিযানে নামে। আর এই অভিযানে সাফল্য মেলে।

        জম্পুই-কাঞ্চনপুর সড়ক থেকে সাধারণ পোশাকে আসা দুই জঙ্গিকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আটক করে পুলিশ। এরা হল অসমের হাইলাকান্দির বাসিন্দা ধনঞ্জয় রিয়াং (৩৯) এবং দামছড়ার স্থায়ী পুনর্বাসনপ্রাপ্ত রিয়াং শিবির কাসকাওয়ের বাসিন্দা সদাই নন্দ রিয়াং। এদের তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয়েছে ডিনামাইট ও নাশকতার সামগ্রী। পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওই সড়কে ডিনামাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কাঞ্চনপুর থানার পুলিশের গাড়ি উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করছিল। কিন্তু দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্তদের ধরে ফেলেন কাঞ্চনপুর থানার ওসি। 

        এরপর জেলা পুলিশ শুক্র ও শনিবার দিনভর ধৃতদের জেরা করে। আর ওই জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এদের কাছ থেকে স্বাধীন ব্রুল্যান্ড প্রতিষ্ঠার দাবিতে লেখা একটি চিঠিও উদ্ধার করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, জঙ্গিরা নিজেদের লক্ষ্যে সফল হলে উত্তর ত্রিপুরার শান্ত পরিবেশ নষ্ট করে নতুন করে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করত। সেই চেষ্টা ভেস্তে যায় আপাতত ত্রিপুরার শান্তির বাতাবরণ বজায় থাকল।     

         ইতিমধ্যে জম্পুই-কাঞ্চনপুর সড়কে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকারও নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতরা সম্প্রতি মিজোরাম ও অসমে গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছিল। সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে জড়িত। সম্প্রতি চাঁদাবাজি ও অস্ত্র পাচারের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ নজরদারি আরও বাড়িয়েছে।

No comments:

Post a Comment