Breaking

Tuesday, August 5, 2025

"খাগড়াবাড়ি থেকেই শুরু হবে রোহিঙ্গা খেদাও", উদয়নের_নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ শুভেন্দুর

 "খাগড়াবাড়ি থেকেই শুরু হবে রোহিঙ্গা খেদাও", 

উদয়নের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ শুভেন্দুর 



       #অনিকেত_পান্থ, রায়গঞ্জ : "গতকাল ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে আমার ওপর হামলার 'ছক' কষা হয়। সেইমতো 'দুর্ধর্ষ অপরাধী' উদয়ন গুহর নেতৃত্বে প্রায় ১৫০০ রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিম আমার কনভয়ে হামলা চালায়। ওদের লক্ষ্য ছিল আমাকে হত্যা করা।" বেলাশেষে কলকাতা ফিরে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ঠিক এই ভাষাতেই তাঁর ওপর হামলার ব্যাখ্যা দিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে, শুভেন্দুর অভিযোগকে কোনো আমলই দিলেন না মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি স্পষ্ট বললেন, "তিনি উদয়ন গুহর চামড়া তুলে নিব আমরা বলবেন, আর কোচবিহারের মানুষ মুখ বুঝে সেসব শুনবেন... ! তিনি উসকানি দেবেন, জনগণ উনাকে ধানদূর্বা দিয়ে পূজা করবে...? 

       আজ, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটার পর কোচবিহারের খাগড়াবাড়ি চৌপথিতে শুভেন্দুর কনভয় পৌঁছালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের কয়েকটি গাড়ি এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। কারণ ঘটনাস্থলে প্রচুর লোকসমাগম লক্ষ করা গেছে। এদের মধ্যে কিছু মানুষের হাতে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা। আর কারও কারও হাতে ছিল কালো পতাকা। পতাকার লাঠি দিয়ে গাড়ির কাচ ভাঙা হয়। কেউ কেউ মোটা লাঠি দিয়ে ও ইট ছুড়ে কাচ ভেঙেছে বলে শুভেন্দু অভিযোগ করেন। তিনি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ করেন। এ ছাড়াও খাগড়াবাড়ি থেকেই তিনি রোহিঙ্গা - বিরোধী তথা তাদের তাড়ানোর আন্দোলন শুরু করবেন বলে এদিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন 

      প্রসঙ্গত, কোচবিহার জেলায় তিনজন বিজেপি নেতা আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন সেই ঘটনার প্রতিবাদে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করার জন্য শুভেন্দু কোচবিহার যাচ্ছিলেন। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে তিনি সড়কপথে কোচবিহারের দিকে রওয়ানা হন। ঘোকসাডাঙ্গায় পৌঁছানোর পরে বিক্ষোভের মুখে পড়েন বলে আরও বড়ো হামলার আশঙ্কা করে শুভেন্দুকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে উঠতে বলেন নিশীথ অধিকারী। এরপর তিনি ডবল বুলেটপ্রুফ কাচ লাগানো গাড়িতে ওঠেন। কোচবিহার শহরে ঢোকার মুখে খাগড়াবাড়িতে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ তৃণমূলের জনসভা চলছিল। ওই সভা থেকেই শুভেন্দুর ওপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, এদিন পাওয়া ভিডিয়ো ও স্থিরচিত্রে স্পষ্ট দেখা যায় যে হামলাকারীদের হাতে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা ছাড়াও কালো রঙের পতাকা।

        এদিন শুভেন্দুর ওপর হামলার পর গোটা রাজ্যে বিজেপি বিক্ষোভ, প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই বিক্ষোভ, প্রতিবাদে কলকাতা থেকে শুরু করে মোট উনিশটি স্থানে জনজীবন ব্যাহত হয়েছে। এদিকে, তাঁর ওপর প্রাণঘাতী হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কা করে গতকাল, সোমবার শুভেন্দু রাজ্যপাল -সহ পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের আগাম চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলেন। তবুও তাঁকে আক্রান্ত হতে হয়েছে বলে শুভেন্দু এর দায় চাপিয়েছেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার ও রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহর ওপর। উদয়ন গুহ তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাজ্যের মানুষের বিরুদ্ধে ওরা যেসব শুরু করেছে তাতে মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। ফলে ওরা যেখানে যাবে, মানুষ বিক্ষোভ দেখাবে।

        উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিরোধী দলনেতাকে কালো পতাকা দেখানো, তাঁর গাড়িতে হামলা সুষ্ঠু ও সুস্থ গণতন্ত্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়। কেন-না তিনি কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে কলকাতা থেকে কোচবিহার গোটা পথ নির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে কোচবিহারের পুলিশ সুপারের কার্যালয় অভিমুখে রওয়ানা হয়েছিলেন। তাই রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের উচিত ছিল শুভেন্দুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাঁরা এতে 'ব্যর্থ ' হয়েছেন। কেন -না প্রশাসন যদি বিরোধী দলনেতা সমেত মাত্র পাঁচজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এই রাজ্যের সাধারণ মানুষকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখবে...? এই প্রশ্ন আজ শুভেন্দু যেমন তুলেছেন, তেমনি গোটা রাজ্যের মানুষও এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। আর এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভে।

#Attack_On_Shubhendu_Adhikari

No comments:

Post a Comment