Breaking

Friday, August 29, 2025

মোদিকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে উত্তাল দেশ, কলকাতা - পাটনায় কংগ্রেস দপ্তরে "হামলা-ভাঙচুর" বিজেপির

 মোদিকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে উত্তাল দেশ, কলকাতা - পাটনায় কংগ্রেস দপ্তরে "হামলা-ভাঙচুর" বিজেপির 












       বিশেষ প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তাঁর প্রয়াত মাকে ঘিরে অশালীন মন্তব্যের জেরে প্রথমে কলকাতা ও পাটনায়, পরে সারা পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। 

      অভিযোগ, পাটনা ও কলকাতায় কংগ্রেসের সদর দপ্তরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ফলে প্রথমে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে হলেও পরে দেশজুড়ে কংগ্রেস ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটছে, যা থমথমে পরিস্থিতির জন্ম দিচ্ছে।

       প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত হয় বিহারের দ্বারভাঙায় কংগ্রেসের ভোটার অধিকার যাত্রা চলাকালে। অভিযোগ, ‘ভোটার অধিকারের যাত্রা’য় অংশ নেওয়া কংগ্রেসের পতাকা গায়ে জড়ানো এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল মন্তব্য করেন। মুহূর্তেই সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

         বিজেপি এই ঘটনায় থানায় এফআইআর দায়ের করে কংগ্রেসকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলে। পরে দ্বারভাঙা পুলিশ জানায়, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয়েছে। তবে বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। 

      শুক্রবার বিহারের পাটনায় বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় বিক্ষোভে নামলে কংগ্রেস কর্মীরাও পাল্টা মাঠে নামে। একপর্যায়ে দুই দলের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ শুরু হয়। দলীয় পতাকা লাগানো বাঁশ দিয়ে একে অপরকে মারতে দেখা যায় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের। সংঘর্ষে আহত হন অনেকেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

        বিহারের আঁচ এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। এদিনই কলকাতায় কংগ্রেসের রাজ্য সদর দপ্তর বিধান ভবনের সামনে কংগ্রেসবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিজেপি। অভিযোগ উঠেছে, বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা কংগ্রেস দপ্তরে ঢুকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। রাহুল গান্ধির ছবি ছেঁড়া ছাড়াও কংগ্রেসের পোস্টার-ব্যানার নষ্ট করা হয়।

       ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, “রাজনীতিতে দেউলিয়াপনা ছাড়া কেউ এই ধরনের কাজ করতে পারে না। দেশে বিজেপির দুর্নীতি ধরা পড়ছে বলেই কংগ্রেসের উপর রাগ ঝাড়ছে তারা। প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি যে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

        বিহারের কংগ্রেস নেতা আশুতোষ অভিযোগ করেন, “এই ঘটনায় সরকারেরই মদত রয়েছে। নীতীশ কুমার ভুল করছেন। আমরাও জবাব দেব।” অন্যদিকে বিজেপি নেতা নীতিন নবীন বলেন, “মায়ের অপমানের বদলা প্রতিটি ছেলে কংগ্রেসকে দেবে। এর জবাব অবশ্যই দেওয়া হবে।”

       এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও। এদিন তিনি গুয়াহাটিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যস্ত। তবুও অমিত শাহ সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “রাহুল গান্ধির নেতৃত্বে কংগ্রেস- এর রাজনীতি সবচেয়ে নীচে নেমে গেছে। একজন গরিব মায়ের ছেলে ১১ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন—তা তারা মেনে নিতে পারছে না। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর প্রয়াত মাকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য শুধু লজ্জাজনক নয়, গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্কও।”

     বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেছেন, “এই ধরনের আক্রমণ সব সীমা ছাড়িয়েছে। রাহুল গান্ধি ও তেজস্বী যাদবের ক্ষমা চাওয়া উচিত।"

     এদিকে, শুক্রবার কংগ্রেস দপ্তরে বিজেপির "আক্রমণ ও হামলার" পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কলকাতা, রঘুনাথগঞ্জ সমেত রাজ্যের নানা স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের কর্মীরা। 

     উত্তর কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল থেকে কংগ্রেস কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কুশপুতুল পোড়ায়। অন্যদিকে, পাটনা সহ বিহারের বিভিন্ন এলাকায় কংগ্রেস কর্মীরাও প্রতিবাদে শামিল হয়েছে।

No comments:

Post a Comment